বিশ্বের গড় তাপমাত্রা আগামী পাঁচ বছরের যেকোনো একটি বছরে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলতে পারে— এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO)। সংস্থাটি জানিয়েছে, এমন আশঙ্কার সম্ভাবনা প্রায় ৮০ শতাংশ। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই উদ্বেগজনক তথ্য।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা আরও বলছে, ২০৩০ সালের আগেই প্রথমবারের মতো এমন একটি বছর আসতে পারে, যখন পৃথিবীর গড় উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সীমাও অতিক্রম করবে। বিজ্ঞানীরা একে ‘বিস্ময়কর’ ও ‘সতর্কতামূলক সংকেত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
২০২৪ সালেই বার্ষিক গড় হিসেবে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সীমা অতিক্রম করেছে পৃথিবীর উষ্ণতা, যা কয়েক বছর আগেও অসম্ভব বলে মনে করা হতো। এর আগে ২০২৩ সাল ছিল আবহাওয়া রেকর্ড সংরক্ষণের ১৭৫ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল কো ব্যারেট বলেন,
“সাম্প্রতিক অতীতে এমন ১০টি বছরের সাক্ষী থেকেছি আমরা, যেখানে তাপমাত্রা পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় বেশি ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আগামী দিনগুলোতে আরও কয়েকটি উষ্ণতম বছরের অভিজ্ঞতা আমাদের হতে চলেছে। এর প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতি, দৈনন্দিন জীবনযাপন, বাস্তুতন্ত্র এবং পুরো গ্রহের ওপর।”
ডব্লিউএমও-র ক্লাইমেট সার্ভিস বিভাগের পরিচালক ক্রিস হিউইট জানান,
“আমরা একটি বিপজ্জনক অবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তবে এখনো সময় আছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারলে এই উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।”
বিশ্বের উষ্ণায়ন পরিমাপের ভিত্তি হিসেবে ধরা হয় ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত সময়ের ভূত্বকের গড় তাপমাত্রাকে। তখন এই গড় ছিল ১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই সময়ের পর থেকেই শুরু হয় বিস্ময়কর হারে শিল্পায়ন, যা পরিবেশবিদদের মতে, আজকের জলবায়ু সংকটের অন্যতম প্রধান কারণ।